তারাবীহ নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ও মোনাজাত।

 সবাইকে পবিত্র রমজান মাসের শুভেচ্ছা রইলো। রমজান মাস হলো রহমতের মাস, নেয়ামতের মাস, নাজাতের মাস। এ মাস অনেক ফজিলতপূর্ণ, আল্লাহর রাসূল নিজে এ মাসে বেশি বেশি আমল করতেন এবং উম্মতদের বেশি বেশি আমল করার তাগিদ দিতেন। আগামীকাল থেকে শুরু হবে পবিত্র রমজান মাস। আজ রাতে প্রথম তারাবীহ নামাজ আদায় করতে হবে, আজকে আমি আলোচনা করবো কীভাবে তারাবীহ নামাজ পড়বেন?


এশার সালাত আদায় করার পর এবং বিতর নামাজের পূর্বে তারাবীহ নামাজ পড়তে হয়। তারাবীহ নামাজ দুই রাকাত করে মোট মোট বিশ রাকাত পড়তে হয়।

এ নামাজ অন্যান্য নামাজের মত করেই পড়তে হয়,


তারাবিহ নামাজের নিয়ত :

উচ্চারণ: নাওয়াইতুআন উসালি­য়া লিল্লাহি তাআ’লা, রাকাআ’তাই সালাতিত তারাবিহ সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তাআ’লা * মুতাওয়াযজ্জিহান ইলা যিহাতিল কা’বাতিশ শারিফাতি, আল্লাহু আকবার। * (যদি জামাআ’তের সহিত নামাজ হয় তবে- ইক্বতাদাইতু বি হাজাল ইমাম বলতে হবে)।


অর্থ: আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়্যত করছি, আল্লাহু আকবার। (যদি জামাআ’তের সহিত নামাজ হয় তবে- এই ইমামের ইমামতিতে জামাআ’তের সহিত)।


যাদের আরবী উচ্ছারণ করতে সমস্যা হয় অথবা পড়তে পারেন না। তারা বাংলায় বলবেন ‘আমি কিবলামুখী হয়ে দুই রাকাআ’ত তারাবিহ সুন্নাত নামাজ আল্লাহর জন্য আদায়ের নিয়্যত করছি, আল্লাহু আকবার’। এটা বলেই নিয়্যত করতে পারবেন।


 প্রতি ৪ রাকাত পর পর একটু করে বিশ্রাম নিতে হয় এবং একটি দোয়া পড়তে হয়, যারা দোয়াটি মুখস্থ জানেন না তারা 'সোবাহান‌আল্লাহ,' 'আলহামদুলিল্লাহ' তাসবিহ পড়তে পারেন। তারাবীহ নামাজের দোয়াটি হলো :



سُبْحانَ ذِي الْمُلْكِ وَالْمَلَكُوتِ سُبْحانَ ذِي الْعِزَّةِ وَالْعَظْمَةِ وَالْهَيْبَةِ وَالْقُدْرَةِ وَالْكِبْرِيَاءِ وَالْجَبَرُوْتِ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْحَيِّ الَّذِيْ لَا يَنَامُ وَلَا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدَ سُبُّوْحٌ قُدُّوْسٌ رَبُّنا وَرَبُّ المْلائِكَةِ وَالرُّوْحِ


উচ্চারণ : ‘সুবহানা জিল মুলকি ওয়াল মালাকুতি, সুবহানা জিল ইয্যাতি ওয়াল আঝমাতি ওয়াল হায়বাতি ওয়াল কুদরাতি ওয়াল কিব্রিয়ায়ি ওয়াল ঝাবারুতি। সুবহানাল মালিকিল হাইয়্যিল্লাজি লা ইয়ানামু ওয়া লা ইয়ামুত আবাদান আবাদ; সুব্বুহুন কুদ্দুসুন রাব্বুনা ওয়া রাব্বুল মালায়িকাতি ওয়ার রূহ।’



তারাবীহ নামায পড়া শেষ করে আমাদের দেশে সমবেত ভাবে মোনাজাত ধরা হয়, মোনাজাতটি হলো এই


اَللَهُمَّ اِنَّا نَسْئَالُكَ الْجَنَّةَ وَ نَعُوْذُبِكَ مِنَ النَّارِ يَا خَالِقَ الْجَنَّةَ وَالنَّارِ- بِرَحْمَتِكَ يَاعَزِيْزُ يَا غَفَّارُ يَا كَرِيْمُ يَا سَتَّارُ يَا رَحِيْمُ يَاجَبَّارُ يَاخَالِقُ يَابَارُّ - اَللَّهُمَّ اَجِرْنَا مِنَ النَّارِ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ يَا مُجِيْرُ- بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّحِمِيْنَ


উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকাল জান্নাতা ওয়া নাউজুবিকা মিনাননার। ইয়া খালিক্বাল জান্নাতি ওয়ান নার। বিরাহমাতিকা ইয়া আঝিঝু ইয়া গাফফার, ইয়া কারিমু ইয়া সাত্তার, ইয়া রাহিমু ইয়া ঝাব্বার, ইয়া খালিকু ইয়া বার্রু। আল্লাহুম্মা আঝিরনা মিনান নার। ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝিরু, ইয়া মুঝির। বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমিন।’


তাছাড়া তারাবিহ নামাজের পর সাইয়্যিদুল ইসতেগফারও পড়া যেতে পারে-


اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ


উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্বতানি; ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আ’হদিকা ওয়া ওয়া’দিকা মাসতাত্বা’তু, আউজুবিকা মিন শাররি মা সানা’তু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া; ওয়া আবুউ বিজামবি ফাগফিরলি ফা ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।’


তারাবীহ নামাজ শেষে তিন রাকাত বিতর নামাজ জামাতের সাথে আদায় করতে হয়।


আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সবাইকে পবিত্র রমজান মাসে বেশি বেশি আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

তারাবীহ নামাজের নিয়ম নিয়ত দোয়া ও মোনাজাত


আরো পড়ুন : রোজা ভঙ্গের কারণ সমূহ ও রোজার প্রয়োজনীয় দোয়া সমূহ

1 মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন